অন্যান্যফিচার

তাওবার দরজা যখন বন্ধ হয়ে যাবে

মহান আল্লাহ বলেন, ‘বস্তুত তা (শাস্তি বা কিয়ামত) তোমাদের কাছে আসবে হঠাৎ করে এবং তোমাদের হতভম্ব করে দেবে, ফলে তারা তা প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হবে না।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৪০)

তাফসির : আলোচ্য আয়াতে কিয়ামত বা যেকোনো আজাব আসার কথা বলা হয়েছে। মূলত কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সুনির্দিষ্ট সময় মানুষের কাছে অজ্ঞাত হলেও এর কিছু আলামত জানানো হয়েছে। কিয়ামত আকস্মিকভাবে সংঘটিত হওয়ার আগে যখন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে তখন আর কারো তাওবা কবুল হবে না।

এরপর কেউ ঈমান আনলে কিংবা নিজের পাপ মোচনের জন্য তাওবা করলে তা আর গ্রহণ করা হবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাওবা তাদের জন্য নয়, যারা (মৃত্যু পর্যন্ত) মন্দ কাজ করেছে, অবশেষে তাদের কারো কাছে মৃত্যু উপস্থিত হলে সে বলে, আমি এখন তাওবা করেছি এবং তাদের জন্যও নয়, যাদের কাফির অবস্থায় মৃত্যু হয়, তাদের জন্যই মর্মন্তুদ শাস্তি প্রস্তুত করেছি। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৮)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যেদিন আপনার রবের কোনো নিদর্শন (কিয়ামত) আসবে সেদিন সেই ব্যক্তির ঈমান কাজে দেবে না যে আগে ঈমান আনেনি অথবা ঈমান এনে কোনো ভালো কাজ করেনি, আপনি বলুন, তোমরা অপেক্ষা করো, আমরাও অপেক্ষায় ছিলাম। ’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৫৮)

কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগে সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে। তখন আর কারো তাওবা গ্রহণ করা হবে না। বিভিন্ন হাদিসে তাওবা কবুল না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাঁর হাতকে রাতে প্রসারিত রাখেন, যেমন দিবসের পাপীরা তাওবা করে। তিনি তার হাত দিবসে প্রসারিত রাখেন, যেন রাতের পাপীরা তাওবা করে। যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত না হয়। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৭৫৯)

ইমাম নববী (রহ.) বলেছেন, কোনো মুমিন বান্দা গুনাহ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তা থেকে পাপ মোচন চেয়ে তাওবা করা আবশ্যক। গুনাহ যদি সেই বান্দা ও আল্লাহ সংশ্লিষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে তাওবার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। তা হলো, গুনাহ পুরোপুরি পরিহার করা, কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হওয়া এবং তা পুনরায় না করার প্রতিজ্ঞা করা। আর গুনাহের সঙ্গে অন্য মানুষের সম্পৃক্ততা থাকলে তাহলে তার অধিকারকে ফিরিয়ে দিতে হবে। সম্পদ হরণ করলে তা ফিরিয়ে দিতে হবে, মিথ্যা সাক্ষী অথবা সম্মানহানি, পরনিন্দা বা এ ধরনের কিছু করলে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। (রিয়াদুস সালিহিন, পৃষ্ঠা : ৪৭)

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button